২৪খবরবিডি: 'চট্টগ্রাম মহানগরে সাংগঠনিক, স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজপথের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। এ জন্য এ মাসে নগরজুড়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি আগামী মাসে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা কমিটির সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে।'
এভাবে দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করে সরকারবিরোধী আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে বলে দলীয় নেতারা জানান। সর্বশেষ গতকাল রবিবার বিকেলে নগরের পুরনো রেলস্টেশন চত্বরে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগম হয়। এর আগে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস, ১৭ আগস্ট বোমা হামলার প্রতিবাদে তিন সপ্তাহ ধরে মহানগর আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। এসব কর্মসূচিতে জ্যেষ্ঠ নেতারা একসঙ্গে থাকায় তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিকে সাম্প্রতিক সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে কয়েক দিন ধরে নগর আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশগুলোতে ব্যাপক জনসমাগমের মধ্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে জবাব দেওয়া হচ্ছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। দলীয় নেতারা জানান, আগামী ১ অক্টোবর মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হওয়ার কথা। এর আগে কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী মহানগর আওয়ামী লীগের আওতাধীন ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পন্ন করতে হবে। সম্মেলনগুলো কবে হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে চলতি মাসের শেষ দিকে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অথবা বর্ধিত সভা হবে।
-দলীয় সূত্রগুলো জানায়, এরই মধ্যে নগরীর সাংগঠনিক ১২৯টি ইউনিটের মধ্যে ৯৮টির সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের মধ্যে শুধু একটির (৪১ নম্বর পতেঙ্গা ওয়ার্ড) সম্মেলন হয়েছে। বাকি ৪২টি ওয়ার্ডের সম্মেলন আগামী মাসে। এসব সম্মেলনের পাশাপাশি নগরীর ১৫টি সাংগঠনিক থানা কমিটিরও সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন নেতারা।
আ. লীগ শক্তি বাড়াচ্ছে সাংগঠনিক কর্মসূচির মাধ্যমে
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন গতকাল রবিবার ২৪খবরবিডিকে বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য আগামী সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সংগঠনকে সাংগঠনিকভাবে আরো বেগবান করা এবং সব স্তরের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করা।' একই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ বলেন, ‘১ আগস্ট থেকে নগরের প্রত্যেক ওয়ার্ড ও থানায় শোক দিবসসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।'
সাংগঠনিক কার্যক্রমগুলো নিয়ে আমরা কয়েক দিন পর একটি সভা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। বিএনপির উসকানিমূলক বিভিন্ন বক্তব্য ও হুমকি-ধমকির প্রতিবাদে এরই মধ্যে নগরের বিভিন্ন এলাকায় আমাদের সাংগঠনিক কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আমরা রাজপথে আছি, থাকব।''কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক বলেন, 'নগরে আমাদের কমিটির আওতাধীন প্রায় ইউনিটের সম্মেলন সম্পন্ন হওয়ায় এখন ওয়ার্ড সম্মেলন করতে আমাদের সমস্যা হবে না। যেসব ওয়ার্ডে সম্মেলন হয়ে যাবে, সেখানে আমরা থানা কমিটির সম্মেলন দ্রুত করে ফেলতে পারব। রাজনৈতিক আন্দোলন কর্মসূচির নামে কাউকে রাস্তায় নেমে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে দেওয়া যাবে না।' নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, আগামী বছরের শেষ দিকে অথবা ২০২৪ সালের প্রথম দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। সেই লক্ষ্যে এখন চট্টগ্রাম নগরীতে সংগঠনকে ঢেলে সাজানো হবে। বিশেষ করে তৃণমূলকে শক্তিশালী করা গেলে সংগঠনের কার্যক্রম আরো জোরদার হবে। মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটির সভাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে এখন প্রায় সব নেতা উপস্থিত থাকছেন। বলা হচ্ছে, তাদের অনেকের লক্ষ্য আগামী নতুন কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়া। এসব কারণে ভেদাভেদ ও দূরত্ব ভুলে জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকেই এখন কর্মসূচিগুলোতে অংশ নিচ্ছেন।